কেন ফের টিকটক নিয়ে উঠছে প্রশ্ন, কেন ভয় পাচ্ছে মার্কিন মুলুকও ?

কেন ফের টিকটক নিয়ে উঠছে প্রশ্ন, কেন ভয় পাচ্ছে মার্কিন মুলুকও ?

উত্তরদক্ষিণ অনলাইন ২৯ অক্টোবর ২০১৯ আপডেট ১৪:৫০

বর্তমানে টিকটক এবং তার চিনা সংস্করণ ‘দুয়িন’ মিলে এক বিলিয়ন (১০০ কোটি) ডাউনলোডের মাইলফলক প্রায় ছুঁয়ে ফেলেছে। বিশ্ববাজারে ডাউনলোডের তালিকায় এটি এখন দ্বিতীয় জনপ্রিয়তম অ্যাপ।

ফের শিরোনামে টিকটক। হংকংয়ে চলতে থাকা সরকার-বিরোধী প্রতিবাদ সেন্সর করে দিচ্ছে এই অ্যাপ, এই অভিযোগের পাশাপাশি এবার উঠে এলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার পরিপ্রেক্ষিতে অ্যাপটির বিরুদ্ধে তদন্ত চালানোর দুই বর্ষীয়ান সাংসদের (সেনেটর) দাবি। চাক শুমার এবং টম কটন দাবি জানিয়েছেন, টিকটক জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষতি করছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হোক।

টিকটক (TikTok) কী?

এই অ্যাপের মাধ্যমে যে কোনও iOS অথবা Android ব্যবহারকারী বাড়িতে বসেই তৈরি করতে পারেন স্বল্প-দৈর্ঘ্যের লিপ-সিঙ্ক (lip-sync), কমেডি, এবং ট্যালেন্ট ভিডিও। ২০১৬ সালে এই অ্যাপ বাজারে ছাড়ে শীর্ষস্থানীয় চিনা প্রযুক্তি সংস্থা বাইটডান্স (Bytedance)। এক বছর পরেই আরেক জনপ্রিয় অ্যাপ Musical.ly-র হাত ধরে ভারত এবং আরও কিছু দেশের বাজারে প্রবেশ করে টিকটক। বর্তমানে টিকটক এবং তার চিনা সংস্করণ ‘দুয়িন’ মিলে এক বিলিয়ন (১০০ কোটি) ডাউনলোডের মাইলফলক প্রায় ছুঁয়ে ফেলেছে। বিশ্ববাজারে ডাউনলোডের তালিকায় এটি এখন দ্বিতীয় জনপ্রিয়তম অ্যাপ, ফেসবুকের মালিকানাধীন হোয়াটসঅ্যাপের ঠিক পরেই।

মার্কিন মুলুক ভয় পাচ্ছে কেন?

একাধিক মার্কিন সাংসদ বা সেনেটরের সন্দেহ, টিকটক জাতীয় নিরাপত্তার পক্ষে বিপজ্জনক, এবং তাঁরা চান, চিনা সরকারের সঙ্গে সংস্থাটির সম্পর্কের গভীরতা খতিয়ে দেখুক মার্কিন নিয়ন্ত্রক এবং নিরাপত্তা সংস্থাগুলি। মার্কিন সেনেটের বর্ষীয়ান ডেমোক্র্যাট শুমার ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের কার্যনির্বাহী অধিকর্তা জোসেফ ম্যাগউয়ারকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, “যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই ডাউনলোডের সংখ্যা ১১০ মিলিয়নের (১১ কোটি) বেশি, সেখানে টিকটক কাউন্টার-ইন্টেলিজেন্সের এমন একটি সম্ভাব্য হাতিয়ার, যাকে আমরা উপেক্ষা করতে পারি না।”

চিঠিটিতে সই করেছেন আরকান্সাসের রিপাবলিকান সেনেটর কটনও। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে যে “কিছু বিষয়ে সেন্সরশিপ এবং কূটকৌশলের সম্ভাবনা” নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এখানে প্রেক্ষিত হলো সেইসব তথ্যসূত্র, যা দাবি করে যে টিকটক “চিনের কমিউনিস্ট পার্টির পক্ষে রাজনৈতিকভাবে স্পর্শকাতর, এমন বেশ কিছু বিষয়বস্তুর ওপর সেন্সরশিপ প্রয়োগ করে” টিকটক। এসব বিষয়বস্তুর মধ্যে রয়েছে “হংকংয়ের সাম্প্রতিক গণপ্রতিবাদ, তিয়ানানমেন স্কোয়ার সংক্রান্ত প্রসঙ্গ, তিব্বত অথবা তাইওয়ানের স্বাধীনতার প্রশ্ন, এবং উইঘুরদের প্রতি আচরণ”।

পত্রলেখকরা আরও দাবি করেছেন যে “টিকটক যদিও বলেছে চিনে তাদের কোনও কার্যকলাপ নেই, এবং মার্কিন ডেটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই গচ্ছিত থাকে, বাইটডান্সকে চিনের আইন মেনেই চলতে হয়”।

জবাবে কী বলেছে টিকটক?

দুই সেনেটরের চিঠির জবাবে টিকটক বলেছে, তারা মার্কিন ব্যবহারকারীদের সমস্ত ডেটা আমেরিকাতেই রাখে, এবং “সিঙ্গাপুরে থাকে অতিরিক্ত ব্যাক-আপ”। “আমাদের সমস্ত ডেটা সেন্টার চিনের বাইরে অবস্থিত, এবং কোনও ডেটাই চিনের আইনের আওতায় পড়ে না। এছাড়াও আমাদের নির্দিষ্ট টেকনিক্যাল টিম রয়েছে, যার মাধ্যমে আমরা অত্যন্ত নিষ্ঠা সহকারে সাইবার নিরাপত্তা নীতি, ডেটা গোপনীয়তা এবং নিরাপত্তা নিয়মাবলী মেনে চলি।”

বিষয়বস্তু সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে টিকটক জানিয়েছে যে তারা “চিনের পক্ষে স্পর্শকাতর বলে কোনোরকম কন্টেন্ট সরিয়ে নেয় না”, এবং চিনের সরকার কখনও তাদের তা করতে বলেও নি। তারা একথাও জানিয়েছে যে “ক্যালিফোর্নিয়ায় অবস্থিত” তাদের কন্টেন্ট দেখভালের দায়িত্বে থাকা মার্কিন দলটি আমেরিকার আইনানুসারে অ্যাপে পোস্ট করা বিষয়বস্তুর পর্যালোচনা করে। “আমাদের ওপর কোনও বিদেশি সরকারের প্রভাব নেই, চিনা সরকারেরও না। টিকটক চিনে কোনোরকম কাজ করে না, ভবিষ্যতে করার পরিকল্পনাও নেই।”

Md Enamul

Leave a Reply

Discover more from Daily Uttor Dokkhin

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading