চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশকে ৮ উইকেটে হারাল পাকিস্তান
উত্তরদক্ষিণ। মঙ্গলবার, ৩০ নভেম্বর ২০২১। আপডেট ১২:২০
চতুর্থ দিনে আবিদ আলী এবং আব্দুল্লাহ শফিকের দুর্দান্ত উদ্বোধনী জুটিতে জয়টা এক প্রকার নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল পাকিস্তানের। তবে প্রায় ১৮ ওভার নাকি থাকতেই আলো স্বল্পতায় গতকাল খেলা বন্ধ করতে বাধ্য হয় আম্পায়াররা। পঞ্চম দিনে এসে দুটি উইকেট হারালেও অধিনায়ক বাবর আজম এবং আজহার আলীর ব্যাটে চড়ে জয়ের বন্দরে সহজেই নোঙর করে সফরকারীরা।
বাংলাদেশের ছুঁড়ে দেওয়া ২০২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসেও দুর্দান্ত উদ্বোধনী জুটি গড়েন আবিদ আলী এবং আব্দুল্লাহ শফিক। চতুর্থ দিনে কোনো উইকেট না হারিয়েই ১০৯ রান তুলে নেয় পাকিস্তান। জয়ের জন্য তখন কেবল ৯৩ রানের দরকার ছিল তাদের। বাংলাদেশি বোলাররা অসহায় আরও একটি দিন শেষ করে। আবিদ আলী ৫৬ আর আব্দুল্লাহ শফিক ৫৩ রানে দিন শেষ করে।
গতদিন ঠিক যেখানে শেষটা টেনেছিল পাকিস্তান শেষ দিনে এসে শুরুটাও সেখান থেকেই করে। শফিক-আবিদ জুটি ধীরে ধীরে দলকে জয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে দিনের ১০ম ওভারে আব্দুল্লাহ শফিককে এলবিডাব্লিউ করে ফেরান মেহেদি হাসান মিরাজ। তবে তখন দেরি হয়ে গেছে অনেক। পাকিস্তানের স্কোরবোর্ডে তখন রান সংখ্যা ১৫১। শফিক ১২৯ বলে ৭৩ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে ফিরলেন ড্রেসিংরুমে।
শফিক যখন ফিরলেন জয়ের জন্য পাকিস্তানের তখন দরকার আর মাত্র ৫১ রান। শফিক ফিরলেও দ্বিতীয় ইনিংসেও সেঞ্চুরির দিকেই এগোচ্ছিলেন আবিদ আলী। তবে তাকে ম্যাজিকাল তিন অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে দেননি তাইজুল ইসলাম। ৯১ রানে তাইজুলের বলে এলবি হয়ে ফেরেন তিনি। প্রথম ইনিংসে দুর্দান্ত শতকের পর দ্বিতীয় ইনিংসেও সে দিকেই হাটছিলেন তিনি। কিন্তু ১৪৮ বলে ৯১ রান করেই তাইজুলের শিকার হয়ে ফেরেন আবিদ। তিনি যখন ফিরছিলেন তখন স্কোরবোর্ডে পাকিস্তানের রান ১৭১, জয়ের জন্য তাদের আর দরকার ছিল মাত্র ৩২ রানের।
এরপর বাকি কাজটা সারেন আজহার আলী এবং বাবর আজম। আজহার ৪৯ বলে ২৪ আর বাবর ২৫ বলে ১৩ রানে অপরাজিত থেকে জয় তুলে নেন।
চট্টগ্রাম টেস্টে টস জিতে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ পড়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে। তবে লিটন দাসের সেঞ্চুরি (১১৪ রান) এবং মুশফিকুর রহিমের ৯১ রানে ভর করে ৩৩০ রান তোলে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের হয়ে প্রথম ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেন হাসান আলী।
জবাবে শুরুটা দুর্দান্ত করলেও তাইজুল ইসলামের ঘূর্ণি জাদুতে কুপোকাত হয় পাকিস্তানের মিডল এবং লোয়ার অর্ডার ব্যাটাররা। সফরকারীদের উদ্বোধনী জুটি ১৪৬ রান তুললেও শেষ পর্যন্ত আবিদ আলীর ১৩৩ আর আব্দুল্লাহ শফিকের ৫২ রানে ২৮৬’তেই অলআউট হয় পাকিস্তান। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৭টি উইকেট তুলে নেন তাইজুল ইসলাম। এতেই স্বাগতিকরা লিড পায় ৪৪ রানের।
প্রথম ইনিংসের মতো বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসটাও ছিল একই সুতায় গাঁথা। দ্বিতীয় ইনিংসে লিটন দাসের অর্ধশতক (৫৯ রান) আর কনকাশনে মাঠ ছাড়া ইয়াসির আলী রাব্বির ৩৬ রানে ভর করে বাংলাদেশ মাত্র ১৫৭ রান তুলতেই অলআউট হয়ে যায়। এই ইনিংসে পাকিস্তানের হয়ে পাঁচ উইকেট নেন শাহিন শাহ আফ্রিদি।
জবাবে মাত্র দুই উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় পাকিস্তান। এতেই দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে যায় পাকিস্তান। সিরিজের শেষ টেস্ট আগামী ৪ ডিসেম্বর ঢাকার মিরপুর শের-ই-বাংলায় মাঠে গড়াবে।