সঙ্গীতজ্ঞ আজাদ রহমান আর নেই

সঙ্গীতজ্ঞ আজাদ রহমান আর নেই

উত্তরদক্ষিণ শনিবার ১৬ মে ২০২০। ১৯:২০

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারজয়ী সুরকার, সঙ্গীত পরিচালক ও কণ্ঠশিল্পী আজাদ রহমান মারা গেছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন। তার পরিবারের বরাত দিয়ে চলচ্চিত্র প্রযোজক গাজী কিবরিয়া লিপু গণমাধ্যমকে জানান, শনিবার (১৬ মে) বিকাল পৌনে ৫টার দিকে শ্যামলীর স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

লিপু বলেন, বেশ কয়েক দিন আগে তিনি একটা অপারেশন করিয়েছিলেন। সেটার পর আজকে তিনি হার্ট অ্যাটাকে মারা গেলেন। তার মধ্যে করোনাভাইরাসের কোনো উপসর্গ ছিল না বলেও দাবি করেন লিপু।

আজাদ রহমানের বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। তার মরদেহ আপাতত শ্যামলীর স্পেশালাইজড হাসপাতালে রাখা হয়েছে। বলা হয়, বাংলাদেশে খেয়াল জনপ্রিয় করার পেছনে আজাদ রহমানের অবদান সবচেয়ে বেশি। তিনি বেশ কিছু দিন নজরুল ইনস্টিটিউটেও পড়িয়েছেন।

চলচ্চিত্রে সংগীত শিল্পী হিসেবে তিনি একবার, সংগীত পরিচালক হিসেবে দুইবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। ‘জন্ম আমার ধন্য হলো মা গো’, ‘ভালোবাসার মূল্য কত’, ‘ও চোখে চোখ পড়েছে যখনই’, ‘মনেরও রঙে রাঙাব’, ‘ডোরা কাটা দাগ দেখে বাঘ চেনা যায়’সহ অনেক গানে সুর দিয়েছেন তিনি।

আজাদ রহমানের জন্ম ১৯৪৪ সালে ইন্ডিয়ার পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলায়। রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় তিনি কীর্তন, ধ্রুপদী সঙ্গীতের পাশাপাশি খেয়াল, টপ্পার চর্চা করেন। পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশে এসে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা শুরু করেন আজাদ রহমান।

১৯৬৩ সালে কলকাতার ‘মিস প্রিয়ংবদা’ চলচ্চিত্রে সঙ্গীত পরিচালনার মধ্য দিয়ে আজাদ রহমানের চলচ্চিত্রে আগমন। সেই চলচ্চিত্রে তার সুরে কণ্ঠ দেন মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়, আরতি মুখার্জি ও প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাবুল চৌধুরীর ‘আগন্তুক’ চলচ্চিত্রের গানে সুর দেওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশি চলচ্চিত্রে শুরু হয় আজাদ রহমানের পথ চলা।

তার সুর করা ও তার নিজের কণ্ঠে গাওয়া এপার ওপার চলচ্চিত্রের ‘ভালবাসার মূল্য কত’, ডুমুরের ফুল চলচ্চিত্রের ‘কারো মনে ভক্তি মায়ে’, দস্যু বনহুর চলচ্চিত্রের ‘ডোরা কাটা দাগ দেখে বাঘ চেনা যায়’ গানগুলো সত্তরের দশকে তুমুল জনপ্রিয়তা পায়। তিনি চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনার পাশাপাশি ‘জন্ম আমার ধন্য হলো মা গো- এর মতো কালজয়ী দেশাত্মবোধক গানেও সুর দিয়েছেন।

১৯৭৭ সালে ‘যাদুর বাঁশি’ চলচ্চিত্রের জন্য এবং ১৯৯৩ সালে ‘চাঁদাবাজ’ চলচ্চিত্রের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। ‘চাঁদাবাজ’ চলচ্চিত্রের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ গায়ক হিসেবেও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।

Md Enamul

Leave a Reply

Discover more from Daily Uttor Dokkhin

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading