নীরবে বন্ধ হয়ে গেলো চক্রাকার বাস

নীরবে বন্ধ হয়ে গেলো চক্রাকার বাস

উত্তরদক্ষিণ| শনিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১| আপডেট ১৭:১৫

নাগরিকদের নিরাপদ এবং আরামদায়ক যাতায়াত নিশ্চিত করতে রাজধানীর ধানমন্ডি ও উত্তরায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) চক্রাকার বাসসেবা চালু করেছিল বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন (বিআরটিসি)। তবে চালু হওয়ার দুই বছর না যেতেই এ সেবা নীরবে বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে যে উদ্দেশ্যে এ সেবা চালু করা হয়েছিল তার সুফল মেলেনি।

আগামীকাল রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) থেকে স্কুল-কলেজ খোলার প্রস্তুতি চলছে। কিছুদিন পর বিশ্ববিদ্যালয়ও খুলবে। তখন গণপরিবহনে চাপ আরও বাড়বে। চক্রাকার বাসসেবা চালু থাকলে ধানমন্ডি ও উত্তরা এলাকার মানুষের যাতায়াত আরও সহজ হতো বলে মনে করেন এলাকা দুটির বাসিন্দারা। এই সেবা চালু করার পর নাগরিকরা অনেক খুশি হয়েছিলেন। তারা স্বাচ্ছন্দ্যে বাসে যাতায়াত করতে পারতেন। বিশেষ করে স্কুলগামী শিশু ও অভিভাবকরা বেশি উপকৃত হয়েছেন। ডিএসসিসি মেয়র দেশে এলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে

বিআরটিসির সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, চক্রাকার সেবা দিতে গিয়ে বিআরটিসি অনেক লোকসান করেছে। এখন তাই নতুন করে ওই সেবা চালু করার পরিকল্পনা নেই। ধানমন্ডি এবং উত্তরায় চক্রাকার বাস সেবা চালুর পর থেকেই বিআরটিসি লোকসান দিয়েছে। এর অন্যতম কারণ ছিল যাত্রী সংকট। তাই এখন নতুন করে এই সেবা চালু করার কোনো উদ্যোগ নেই

এর দুই মাস পর ২৭ মে উত্তরার দুটি রুটে চক্রাকার বাসসেবা চালু হয়। এর মধ্যে আলাওল অ্যাভিনিউয়ের পূর্ব প্রান্ত থেকে হাউস বিল্ডিং, খালপাড় হয়ে উত্তরা আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয়ে একটি সেবা। আরেকটি বিমানবন্দর বাসস্ট্যান্ড থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পশ্চিমে থাকা বিভিন্ন সেক্টরের ভেতর দিয়ে উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টরের স্লুইস গেট পর্যন্ত। তখন বলা হয়েছিল, পাঁচ থেকে ১০ মিনিট পরপরই এই রাস্তার দুই পাশে বাস পাওয়া যাবে।

তবে গত ৭ সেপ্টেম্বর উত্তরার বিভিন্ন সেক্টর ঘুরে কোথাও বিআরটিসির ওই সেবার বাস দেখা যায়নি। পরদিন ৮ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২ পর্যন্ত ধানমন্ডির মিরপুর রোড, ঝিগাতলা, সাত মসজিদ রোড, কলাবাগান, আজিমপুর, পলাশী, এলাকা ঘুরেও কোথাও বিআরটিসির চক্রাকার বাস দেখা যায়নি। এই এলাকার মানুষ যে যার মতো লোকাল বাস, সিএনজি, অটোরিকশা, ব্যক্তিগত গাড়িতে যাতায়াত করছেন।

উত্তরার হাউস বিল্ডিং এলাকার বাসিন্দা জিয়া ইসলাম। তিনি বলেন, ‘উন্নত অনেক দেশেই চক্রাকার বাস সেবা রয়েছে। এই সেবা কার্যকর করা গেলে নগরে ব্যক্তিগত যানবাহন ব্যবহার কমবে। এতে শহরে বা সংশ্লিষ্ট এলাকায় যানজটও অনেকাংশে কমে যাবে।’

ধানমন্ডি এবং উত্তরার এই চক্রাকার বাস সেবা পরিচালনা করতো বিআরটিসির মতিঝিল ডিপো। এই ডিপো সূত্র জানায়, ওই দুটি এলাকার নাগরিকদের সেবা দিতে ১০টি করে ২০টি বিআরটিসির নতুন বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শুরু থেকেই পর্যাপ্ত যাত্রী পাওয়া যাচ্ছিল না।

যানজটের কারণে যথাসময়ে এক টিকিট কাউন্টার থেকে আরেক কাউন্টারে যাওয়া যাচ্ছিল না। ফলে যাত্রীরাও দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকতে চান না। তারা নিজ ব্যবস্থাপনায় যার যার গন্তব্যে যান। ফলে বাসে যাত্রী পাওয়া যেতো না। গাড়িতে দিনে যে পরিমাণ তেল খরচ হয় তার টাকাও উঠতো না। এভাবে ২০২০ সালের মার্চ পর্যন্ত সেবা চালু ছিল। পরে করোনার অজুহাতে সেবা বন্ধ হয়ে যায়। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও এই সেবা তারা আর চালু করেননি। কবে চালু হবে তাও কারও জানা নেই।

তবে মতিঝিল বাস ডিপোর ব্যবস্থাপক মাসুদ তালুকদার বলেন, ‘ধানমন্ডি এবং উত্তরায় চক্রাকার বাস সেবা চালুর পর থেকেই বিআরটিসি লোকসান দিয়েছে। এর অন্যতম কারণ ছিল যাত্রী সংকট। তাই এখন নতুন করে এই সেবা চালু করার কোনো উদ্যোগ নেই।’

তবে ডিএসসিসি মেয়রের সঙ্গে কথা বলে চক্রাকার বাস সেবা চালু করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘এই সেবা চালু করার পর নাগরিকরা অনেক খুশি হয়েছিলেন। তারা স্বাচ্ছন্দ্যে বাসে যাতায়াত করতে পারতেন। বিশেষ করে স্কুলগামী শিশু ও অভিভাবকরা বেশি উপকৃত হয়েছেন। ডিএসসিসি মেয়র দেশে এলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কেএস

mashiurjarif

Leave a Reply

Discover more from Daily Uttor Dokkhin

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading