ঝিনাইদহে গরুর জন্য ডে কেয়ার সেন্টার

ঝিনাইদহে গরুর জন্য ডে কেয়ার সেন্টার

উত্তরদক্ষিণ । মঙ্গলবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ । আপডেট ১৩:৫০

ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার করিঞ্চা গ্রামের ইদ্রিস আলী। প্রতিদিন সকাল হলেই গ্রামের প্রতিটি বাড়ির সামনে গিয়ে হাঁকডাক দেন তিনি। তার ডাকে মালিক ও খামারিরা গোয়াল ঘর থেকে গরু ছেড়ে দেন। গ্রামের এক প্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তের গরুর দল নিয়ে ইদ্রিস আলী ছুটে চলেন মাঠের দিকে। মাথায় ছাতা নিয়ে গরুর দেখভাল করে রাখালরা। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চরিয়ে সন্ধ্যায় আবারও সেগুলো পৌঁছে দেওয়া হয় যার যার বাড়িতে। এই পদ্ধতি এলাকায় গরুর ‘ডে কেয়ার সেন্টার’ নামে পরিচিত।

এটি কোনো রূপকথা বা প্রাচীন দিনের কথা নয়। বাস্তবেই গরুর জন্য এমন ডে-কেয়ার সেন্টার আছে মহেশপুরে! উপজেলার একটি গ্রামে এমন ভিন্ন পেশার সাথে জড়িত কয়েকজন ব্যক্তি। গ্রামের খামারিদের গরু এনে সারাদিন মাঠে চরিয়ে সন্ধ্যায় বাড়িতে ফিরিয়ে দেন তারা। এজন্য গরু প্রতি তাদের দিতে হয় মাসিক বেতন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গ্রামটিতে প্রায় ৪ শত পরিবারের বসবাস রয়েছে। যাদের প্রতিটি পরিবারেই রয়েছে একের অধিক গরু। এমন অনেক পরিবারও রয়েছে যাদের ৪০টির বেশি গরু আছে।

এক যুগ হলো এ পেশায় আছেন ইদ্রিস আলী। তিনি জানান, এই গরু চরিয়ে সংসার চালাচ্ছেন তিনি। স্ত্রী, এক ছেলে এক মেয়ে নিয়ে তার সংসার। মাসে প্রায় ১০ হাজার টাকা আয় হয়।

তার মতো আরও বেশ কয়েকজন এই কাজ করেন। আব্দুল হাকিম তাদের মধ্যে আরেকজন। হাকিম জানান, গরুগুলো তাদের খুব মান্য করে। যেভাবে তাদের চলতে বলা হয় সেভাবেই চলে। কখনও তারা দলের বাইরে যায় না।

আরেকজন জানান, মাঠে খাইয়ে গরু পালন করা খুবই সহজ। যা খোলা মাঠ না থাকায় অনেক স্থানে হয় না। আবার দল বেঁধে মাঠে নেওয়ার অভ্যাসও নেই।
করিঞ্চা এলাকার ইউপি সদস্য আসাদুল ইসলাম জানান, একটি দেশি জাতের গরু বাড়িতে রেখে পালতে গেলে প্রতিদিন ঘাস, ভুষি, খৈল, চালের কুড়ো মিলিয়ে কমপক্ষে ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকা ব্যয় হয়। সেখানে মাঠে চরানো হলে ১০০ টাকা খরচ করলেই চলে।

ঝিনাইদহ জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মনোজিৎ কুমার সরকার জানান, ডে-কেয়ার সেন্টারের এই ধারণা সত্যিই ইনোভেটিভ। এতে একদিকে লাভবান হচ্ছে খামারিরা । অন্যদিকে প্রত্যন্ত পল্লীতে বেকার সমস্যার সমাধানও হয়েছে। এতে গ্রামের স্বাবলম্বীরাও বেশি করে গরু পালনের দিকে ঝুঁকছে।

ইউডি/অনিক

melongazi

Leave a Reply

Discover more from Daily Uttor Dokkhin

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading