বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া সম্পর্কের উন্নতিতে বড় সুবিধাভোগী উত্তর-পূর্ব ইন্ডিয়া

বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া সম্পর্কের উন্নতিতে বড় সুবিধাভোগী উত্তর-পূর্ব ইন্ডিয়া

উত্তরদক্ষিণ । মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪, আপডেট ১২:৩০

বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া সম্পর্কের উন্নতিতে উত্তর-পূর্ব ইন্ডিয়া বড় সুবিধাভোগী বলে মন্তব্য করেছেন ইন্ডিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রহ্মণ্যম জয়শঙ্কর। তার দাবি, ইন্ডিয়া-বিভাজন উত্তর-পূর্ব ইন্ডিয়ার প্রাকৃতিক সংযোগকে ভেঙে দিয়েছিল। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন। ইন্ডিয়ান বার্তাসংস্থা পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইন্ডিয়া বিভাজন বিভিন্ন উপায়ে দেশটির উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোর প্রাকৃতিক সংযোগকে ভেঙে দিয়েছে বলে গত সোমবার মন্তব্য করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রহ্মণ্যম জয়শঙ্কর। তবে তার দাবি, গত এক দশকে কেন্দ্রীয় সরকারের নানা প্রচেষ্টা ওই এলাকার সম্পদের উন্নতি করেছে।

এনডিটিভি বলছে, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের কিরোরি মাল কলেজে ‘দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া এবং জাপানের সাথে উত্তর-পূর্ব ইন্ডিয়ার একীকরণ: অর্থনৈতিক বন্ধন এবং পরিবেশগত সংরক্ষণের ভারসাম্য’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় এসব কথা বলেন এস জয়শঙ্কর। সুব্রহ্মণ্যম জয়শঙ্কর বলেন, পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যে মিয়ানমার এবং তাইওয়ানের মতো প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে ইন্ডিয়ার সম্পর্কের উন্নতি গত এক দশকে নয়াদিল্লিকে বিশ্বের অন্যান্য অংশের সাথে সংযুক্ত করার কাজ দৃঢ় করেছে। তিনি বলেন, দেশভাগ তথা ইন্ডিয়া বিভাজনের প্রভাব প্রাথমিকভাবে রাজনৈতিক বাধার পাশাপাশি প্রশাসনিক সমস্যার কারণে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উন্নতিকে প্রভাবিত করেছিল।

জয়শঙ্করের ভাষায়, উত্তর-পূর্ব ইন্ডিয়ার যে প্রাকৃতিক সংযোগ ছিল বা যে সংযোগ এই অঞ্চল উপভোগ করত ইন্ডিয়া বিভক্তির ফলে তা অনেক উপায়ে ভেঙে গেছে। এর ফলস্বরূপ, উত্তর-পূর্বে যে মাত্রায় প্রবৃদ্ধি দেখা উচিত ছিল তা মন্থর হয়ে যায়। বিভাজনের পর প্রথম কয়েক দশকে দেশের অন্যান্য অংশগুলোর তুলনায় রাজনৈতিক বাধা এবং প্রশাসনিক সমস্যার কারণে উত্তর-পূর্বাঞ্চল সেভাবে কোনও সুবিধা পায়নি।

ইন্ডিয়ার কেন্দ্রীয় এই মন্ত্রী আরও বলেছেন, ইন্ডিয়ার উত্তর-পূর্বে বর্তমান অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা একটি শক্তিশালী ফ্রন্টের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা যদি গত দশকের দিকে তাকাই, তাহলে ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ সম্পর্কের নাটকীয় উন্নতির জন্য বড় সুবিধাভোগী হয়েছে উত্তর-পূর্ব ইন্ডিয়া। ইন্ডিয়ান এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা যখন ২০১৫ সালে স্থল সীমানা চুক্তি করেছিলাম, তখন ইন্ডিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে নতুন স্তরের আস্থা ও বিশ্বাস তৈরি হয়েছিল। আমরা দেখেছি, অন্যান্য অনেক সমস্যার সমাধান হচ্ছে, বিশেষ করে সন্ত্রাসবাদ এবং অস্থিতিশীলতা মোকাবিলা সংক্রান্ত সমস্যাগুলোর। তার ভাষায়, আমরা এখন যা দেখছি, সত্যি কথা বলতে, ইতিহাস যদি আমাদের প্রতি সদয় হতো তাহলে আরো আগেই এগুলো হওয়া উচিত ছিল। আমি সবসময় বলে থাকি, ভারতকে পূর্ব দিকে তাকানোর জন্য দিল্লিকে প্রথমে পূর্ব দিকে তাকানো উচিত এবং উত্তর-পূর্ব দিকে দেখা উচিত। তখনই কেবল উত্তর-পূর্বের সম্ভাবনার পূর্ণ ও যথাযথভাবে সমাদর করা হবে। মিয়ানমারের বিষয়ে এস জয়শঙ্কর বলেন, সেখানে ‘চ্যালেঞ্জ’ মোকাবিলা করার পাশাপাশি প্রবৃদ্ধির পথ তৈরি করার চেষ্টা করছে ইন্ডিয়া।

সুব্রহ্মণ্যম জয়শঙ্কর বলেন, মিয়ানমার আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ ছিল, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের বেশ কিছু সমস্যা ছিল। সামরিক বাহিনী ক্ষমতা গ্রহণের পর গত কয়েক বছরে আরও গুরুতর সমস্যা দেখা দিয়েছে। আমরা আমাদের নিজেদের সীমান্তে সেসব সমস্যার পরিণতি প্রশমিত করার কাজ করছি। মিয়ানমারের মাধ্যমে কানেক্টিভিটিতে আমাদের বড় অংশীদারিত্ব রয়েছে।

ইউডি/এজেএস