ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত শিশু সুরাইয়া বাঁচতে চায়

ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত শিশু সুরাইয়া বাঁচতে চায়

সুদীপ্ত শামীম | উত্তরদক্ষিণ
সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা): রবিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২০ | আপডেট: ১৪:৪৫

মাত্র ছয় বছরের ছোট্ট শিশু সুরাইয়া আক্তার সীমা। এই বয়সে যার সহপাঠীদের সাথে স্কুলে যাওয়া ও খেলাধুলা করে বেড়ানোর কথা। কিন্তু এখন ছোট্ট সুরাইয়ার বেশিরভাগ সময় কাটছে হাসপাতালের বিছানায়। প্রাণচঞ্চল ফুটফুটে এই শিশু দুরারোগ্য ব্যাধি ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে জীবন সায়াহ্নে দাঁড়িয়ে। তাকে প্রতি মাসে ঔষধপত্রের পাশাপাশি দুই ব্যাগ করে রক্ত দিতে হয়। দীর্ঘদিন ধরে সুরাইয়ার চিকিৎসা খরচ চালাতে গিয়ে নিঃস্ব দরিদ্র ভ্যানচালক বাবা সুজা মিয়া।

শিশুটির বাড়ি গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়নের চন্ডিপুর গ্রামে। অর্থের অভাবে দরিদ্র পরিবারের শিশু সুরাইয়ার চিকিৎসা এখন বন্ধের উপক্রম। তার বাবা সুজা মিয়া ভ্যান চালিয়ে যা আয় করতেন তা দিয়েই চলতো চার জনের সংসার। কিন্তু মেয়ের ক্যান্সার চিকিৎসা চালাতে গিয়ে সব আয়ের পথ বন্ধ হয়েছে হতভাগ্য বাবার। সুরাইয়াকে নিয়ে হাসপাতালে কাটছে নির্ঘুম রাত। প্রতিমাসে শিশুটির চিকিৎসায় ব্যয় হয় প্রায় ৪০ হাজার টাকা। তাই দরিদ্র বাবার পক্ষে চিকিৎসার এত ব্যয়বহন করা একেবারে অসম্ভব।

জানা গেছে, জন্মের কিছুদিন পরই শিশুটি ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। প্রথমদিকে জ্বর ও শরীরে ব্যাথা অনুভব হলে বিভিন্ন গ্রাম্য চিকিৎসকের দেয়া ঔষধ খেতো শিশুটি। পরে তার অবস্থার অবনতি হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে দেখায় শিশুটির বাবা। বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে শিশুটির ব্লাড ক্যান্সার ধরা পড়ে। চলতি বছরের ১০ আগষ্ট ব্লাড ক্যান্সার ধরা পড়লে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের চিকিৎসক আতিকুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে আছেন সুরাইয়া। সে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজের তৃতীয় তলার ডি ব্লকের হেমাটলোজি বিভাগের (ক্যান্সার ইউনিট) এক নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন আছে।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সুরাইয়ার সেরে ওঠার সম্ভাবনা ক্ষীণ। তবে বাঁচিয়ে রাখতে হলে তাকে প্রতি মাসে রক্ত দিয়ে যেতে হবে। দীর্ঘ সময় ধরে এভাবে চিকিৎসা চালাতে গিয়ে আর্থিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে তার পরিবার। অন্যের কাছে ধারদেনা করে কোন রকম শিশুটির চিকিৎসা সচল রেখেছেন বাবা সুজা মিয়া। এখন অর্থ সঙ্কটে সুরাইয়ার চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। তাই সমাজের দানশলী বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আকুতি পরিবারের।

কান্না জড়িত কন্ঠে শিশুটির বাবা সুজা মিয়া জানান, “আমি ভ্যান চালিয়ে যা আয় করতাম তা দিয়ে কোন রকম সংসার চলতো। কিন্তু হঠাৎ করে আমার মেয়েটার ব্লাড ক্যান্সার ধরা পড়ায় তার চিকিৎসা চালাতে হিমসিম খাচ্ছি। মেয়েকে নিয়ে ঢাকায় হাসপাতালে থাকায় সব রোজগারের পথ বন্ধ। আমি মানুষের কাছে ধারদেনা করে মেয়ের চিকিৎসায় ব্যয় করে নিঃস্ব। আমার অবুঝ শিশুটার জন্য একটু সাহায্য করুন ভাই। বাচ্চার কষ্ট আমার আর সহ্য হচ্ছে না। এরপর কান্নায় ভেঙে পড়েন সুজা মিয়া। শিশুটির চিকিৎসার খরচ জোগাতে সমাজের হৃদয়বান ও বিত্তশালী মানুষের সহায়তা চেয়েছেন তিনি।”

Md Enamul

Leave a Reply

Discover more from Daily Uttor Dokkhin

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading