কোভিড-১৯ চিকিৎসায় প্লাজমার ‘তেমন কার্যকারিতা’ মেলেনি ইন্ডিয়াতে

কোভিড-১৯ চিকিৎসায় প্লাজমার ‘তেমন কার্যকারিতা’ মেলেনি ইন্ডিয়াতে

উত্তরদক্ষিণ | শুক্রবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২০ | আপডেট: ১৮:৫৪

কোভিড-১৯ রোগীদের সম্ভাব্য চিকিৎসায় তথাকথিত কনভালেসেন্ট প্লাজমা বা সেরে ওঠা রোগীদের রক্তের ব্যবহার তেমন একটা কার্যকর নয় বলে ইন্ডিয়ায় দেখা গেছে। ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নাল-বিএমজেতে শুক্রবার (২৩ অক্টোবর) প্রকাশিত ইন্ডিয়ার ক্লিনিক্যাল পরীক্ষার ফলাফলের বরাত দিয়ে রয়টার্স এক প্রতিবেদনে তথ্যটি জানিয়েছে।

রক্তের তরল, হালকা হলুদাভ অংশকে প্লাজমা বা রক্তরস বলে। তিন ধরনের কণিকা ছাড়া রক্তের বাকি অংশই রক্তরস। সেরে ওঠা রোগীদের প্লাজমায় থাকায় অ্যান্টিবডি সংক্রমিতদের সেরে ওঠতে সহায়তা করতে পারে এমন ধারণা থেকে বিভিন্ন দেশে কোভিড-১৯ চিকিৎসায় এই প্লাজমা ব্যবহার করা হচ্ছে।

তবে সাময়িকীতে প্রকাশিত ফলাফল অনুযায়ী, সংক্রমিতদের শরীরে কনভালেসেন্ট প্লাজমা প্রয়োগ করেও মৃত্যুর হার কমাতে বা গুরুতর অসুস্থতা প্রতিরোধে সফলতা আসেনি।

হাসপাতালে ভর্তি চারশোর বেশি কোভিড-১৯ রোগীর উপর চালানো সমীক্ষা থেকে পাওয়া এই ফলাফল চিকিৎসাকে পিছিয়ে দেবে, যেখানে গত অগাস্টে এটিকে ‘ঐতিহাসিক অগ্রগতি’ হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আমেরিকা ও ইন্ডিয়ায় জরুরি চিকিৎসা হিসেবে প্লাজমা ব্যবহার অনুমোদিত।

ব্রিটেনসহ অন্যান্য দেশগুলি প্লাজমা সংগ্রহ করছে, যাতে এটার কার্যকারিতা প্রমাণিত হলে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা যায়। ইউনিভার্সিটি অব রিডিংয়ে সেলুলার মাইক্রোবায়োলজির বিশেষজ্ঞ সাইমন ক্লার্ক বলেন, সমীক্ষায় প্লাজমা ব্যবহারের কারণে ভাইরাস থেকে মুক্ত হওয়ার গতিতে সামান্য প্রভাব ফেললেও পুনরুদ্ধারে উন্নতির ক্ষেত্রে এটা যথেষ্ট ছিল না। “সহজ কথায়, প্রায়োগিক পরীক্ষায় রোগীদের উপকারে আসেনি এটা।”

ইন্ডিয়াজুড়ে এপ্রিল থেকে জুলাইয়ের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি কোভিড-১৯ আক্রান্তদের মধ্যে মাঝারি পর্যায়ের উপসর্গসহ ৪৬৪ জন্য প্রাপ্ত বয়স্ককে নমুনা হিসেবে নিয়েছিলেন ইন্ডিয়ার গবেষকরা।

এদের দুই ভাগে ভাগ করে এক দলকে মানসম্পন্ন সেরা সেবার সঙ্গে ২৪ ঘণ্টা পরপর দুই বার কনভালেসেন্ট প্লাজমা দেওয়া হয়েছিল। আর আরেক দলকে কেবলমাত্র নিয়ন্ত্রিত উপায়ে মানসম্পন্ন সেরা সেবার দেওয়া হয়েচিল নিয়ন্ত্রণ গ্রুপ সেরা মানের যত্নের সাথে।

গবেষকরা বলছেন, প্লাজমা ব্যবহারের ফলে শ্বাসকষ্ট ও ক্লান্তির মতো কিছু উপসর্গের উন্নতি হয়েছে বলে সাত দিন পরে দেখা যায় এবং সেটা নেতিবাচক রূপান্তরের হার অর্থাৎ অ্যান্টিবডি দ্বারা ভাইরাস দুর্বল হয়ে পড়াকে বেশ তরান্বিত করেছিল। তবে এটি ২৮ দিনের মধ্যেও মৃত্যুর সংখ্যা কমাতে বা রোগের মারাত্মক পরিস্থিতির দিকে যাওয়া ঠেকাতে পারেনি।

রিডিং ইউনিভার্সিটির ভাইরোলজির অধ্যাপক ইয়ান জোনস বলেন, ফলাফল হতাশাজনক হলেও পুরোপুরি অবাক হওয়ার মতো নয়। তিনি বলেন, কোভিড-১৯ আক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খুব দ্রুততার সঙ্গে প্লাজমা দেওয়া হলে তার কাজ করার সম্ভাবনা বেশি থাকে। কোভিড-১৯ এর সম্ভাব্য চিকিত্সা হিসাবে প্লাজমার পরীক্ষা চালিয়ে যেতে তিনি গবেষকদের অনুরোধ জানান। তবে সেটা জন্য সদ্য সনাক্ত হওয়া রোগীদের ওপর প্রয়োগ করা হয় সেটা নিশ্চিত করার উপর জোর দেন।

Md Enamul

Leave a Reply

Discover more from Daily Uttor Dokkhin

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading